Header Ads

বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ গাজীপুর জেলা শাখা

ঈদের অবকাশ


মো: শহিদুল হক
আজ কোরবানীর ঈদের চতুর্থ দিবস। সকাল পেরিয়ে দুপুর হইয়াছে, সকালে ঘুম থেকে উঠিয়া শরীরে ঠান্ডা পানি ঢালিয়া ¯œানটা সারিয়া লইয়া মানিব্যাগের টাকা দেখিতে দেখিতে খাবারের বিপণির দিকে ছুটিলাম; বলবেন ঈদের চার দিনের মস্তকে বাসার কুরবানীর মাংসের হাড়ির নেচে পরিয়া থাকা হাড্ডি গুলোর সাদ টুকু না লইয়া বিপণির দিকে ক্যান? গত রজনীতে কি, বুঝি বৌ বলিয়াছে যে, ‘সকালে থেকে তোমার খাবার বন্দবস্ত হইবে না’; এমন টা হইবার কোনই আশংকা নাই; কেনানা, বৌ নামেন ফুলমতির চাঁদ মুখ খানা দেখিবার সুভাগ্য এখনো আমার হয় নাই, সরল বলিতে এই ঈদে বাড়িতেই যাওয়া হয় নাই। কুরবানী গুরুর হাড্ডি কই কুড়াইব বলিতে পারিবেন? তাই রুটি, কলা, আর মাঝে মধ্যে বাস্ট্যান্ডের চাচার ছোট্ট দোকানের ডাল ভাত গিলিয়াই আমার পবিত্র ঈদ-উল আজাহা। হটেলের চাচাও হয়ত আমাদের দুঃখ বুঝিতে পারিয়া তার আনন্দকে স্যালোট জানিয়া আমাদের কিছু ববগুরে গুল খাওয়া মানুষের সাথে মিশিয়া গিয়েছে। হরহামেসায় জানিতে চাইতে পারেন ঈদে কি আপনার অবকাশ মজ্জুর হয়নাই? না তেমনটাও না; আসলে গত দুই ঈদ ধরিয়াই আমার বাড়িতে যাওয়া হইয়া আসছিল না।
গেল উপবাশ ঈদে মধ্য চাদঁ রজনীতে বাড়ি গিয়েছিলাম নামাজের পরেই আবার চলিয়া আসিতে হইয়াছে। তারও অবশ্যই বেশ কারণ রহিয়াছে ,তখন সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া কলেজে ভর্তি সময় ছিল বলিয়া অফিস খোলা রাখিতে হইয়াছে। শিক্ষা বোর্ডের অনলাইন গোলক ধাঁ-ধাঁয় অকাল পক্ক ছাত্ররা একেবারেই কাঁচা হইয়া উঠিয়া ছিল। কলেজ কতৃপক্ষ একেবারেই যে, ধাঁ-ধায়েঁর মধ্যে ছিল না; এমনটাও নায়। প্রথমবারের মত আনালাইন ভর্তি কার্যক্রম, যাহার কারণে সবাইকেই তাহার মাশুল দিতে হইয়াছে। ঈদের দিন শেষ বেলা থেকেই আমার কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় অফিস খোলা রাখিবার নির্দেশ দিয়াছিলেন। তাই বাধ্য হইয়া মায়ের হতের কোরমা পোলাও ছাড়িয়া অফিসে চলিয়া আসিতে হইয়াছিল । পরে অবশ্য অধ্যক্ষ সাহেব মুখে মুচকি হাসির ছলে ঈদের দিন অফিস করিছি বলিয়া আপসোস করিয়াছিল; হাজার হলেও, আমি কলেজটির পরিচালক পরিষধে রহিয়াছি; তাই এমন আফছোস। যাক আমার কোন আপসোস নেই, নতুন কলেজ করিয়াছি, প্রথম ছাত্র ভর্তি করিতেছি , তার জন্য যদি একটু কষ্ট করিতে হয়, না হয় করিলাম। এবারের কোরবানীর ঈদটা, আবার বাড়ি যাওয়া হয়নাই।
আমার নিবাস কলেজের আবাসিক হোস্টেলে, অর্থাৎ থাকা খাওয়া সব-ই রহিয়াছে এখানে। বাহিরে যাওয়া বলিতে মাসুদ ভাইয়ে চায়ের দোকান, আর কলেজের প্রয়োজনে শিক্ষা বোর্ডে। কলেজে প্রথম ব্যাচ প্রচুর সময় দিতে হয়বলিয়া মাঝে মধ্যে মনে হয়, আমার যদি বৌ থাকিত তাহইলে এত দিনে, ছুঁটকেজ গুছাইয়া লইত! ঈদের কয়েক দিন আগেও ভাবিয়াছি বাড়ি যাব কিন্তু পাওনাদারের টাকা আদায় করিতে না পারায় মনটা খারাপ হইয়া গেল। এদিকে আমি আবার কলেজ থেকে কোন ভাতা গ্রহণ করিয়া থাকি না; ঈদ নিয়ে পরিলাম বিপাকে যাই হুক মনটাকে অনেক বুঝিয়া ঠিক করিলাম চাঁনরাত্রিতে বাড়ি যাব । এদিকে আমার বাড়ি যাওয়া নিয়া মা ব্যকুল হইয়া উঠিয়াছে। রোজই ফোনে তুশামোত করিতেছে, যখনি বললাম মা! আমি ঈদের আগের দিন আসিব তখনি পরিলাম বিপাকে। উপার থেকে মা বলিল শুনিয়াছি তুই বিয়ে করিয়াসিস্, ত বৌ বাহিরে রাখিবার দরকার কি বাড়িতে নিয়া আয়। শুনে আমার চুখ মুখ গরম হইয়া উঠিল। বন্ধু বান্ধবরা বাড়িতে যাইনা বলিয়া মস্করা করিয়া বলে নিকা, বিয়ার কথা; এখন দেখি মা ও; একই কথা বলিতেছে। আমি রাগিয়া বলিলাম, ঠিক আছে আমি এ ঈদটা তোমার বৌ মার সাথে করি; আমি বাড়িতে আসিব না, সেই বলাম; ঠিকি আমার বাড়িতে যাওয়া হইল না। তার পর মা, বাবা, ভাই সবাই অনেক ফোন করিছিল কিন্তু কেন যেন; আর বাড়ি যেতে মনটা চাইল না। এদিকে অর্থের চিন্তা মনের ভিতর গভির ভাবে কাজ করছিল। ভাবলাম ভালই হবে বাড়ি না গেলে, ঈদের মার্কেট বার্তি খরচা টা ‘তু’ বাছিয়া যাইবে। তবে আভার খরাপও লেগেছিল এটাই ছিল প্রথম কোন ঈদের দিন মা ,বাবা সামনে নাই, তবে সেই কষ্ট কোন মতে কাটিয়ে নিরবে কলা মোড়ি আর ফুয়াংএর রোটি খেয়ে ঈদের দিন পার করিলাম হোষ্টেলের বাহিরে কোথাও গেলাম না, আমার কলেজের প্রধান হিসার শাখার আপা ফোনর করে তার বাসায় দওয়াত দিয়ে ছিল, কিন্তু একাএকা কোথও যেতে মন চাইছিল না তাই যাওয়া হইল না। ঈদের পরদিনও একই অবস্থায় কাটলো কম্পিউপারে মভি দেখিয়া সময় পার করিলাম। তবে ঈদের দিন বাড়ি ছাড়া কোন বন্ধু বান্ধবের সাথে কথা হয়নাই বলিয়া ঐ দিন সন্ধায় সাবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করিলা। মনটা অনেক টা ভাল হইয়ে উঠল। পর দিন, রোমে এনে রাখা খাবার শেষ হইয়া গিয়েছিল এখন শেষ ভরসা দোকানে খোজা , অনেক খুজে বাস্ট্যান্ডে একটি দোকান পেয়েছিলাম। এবাবেই অবকাশ্যের দিন গুলো বিদায় জানালো।

No comments

বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ. Powered by Blogger.